১। প্রেম
একদিন আমিও তোমার মতো প্রদোষ বেলার
প্রথম কবিতা হবো। অনুভবে ওড়াব আমার
আলাদিনের আশ্চর্য মোমবাতি। তালগাছ হয়ে
জনশূন্য জনপদে এক পায়ে থাকবো দাঁড়িয়ে।
নিরানন্দ জলাশয়ে শুয়ে শরীরে উত্তাপ মেখে
আঁকাবো হৃদয়ে অভিমানের প্রশান্ত সরোবর।
পদ্মের অধর ছুয়ে সমাধিত হবো শুদ্ধ প্রাণে
শ্মশানের সুঘ্রাণ ওড়াবো আমার কবিতা গানে।
দিকে দিকে চলমান চেনাজানা পথগুলো ভুলে
অস্থিমূলে লাঙল চালিয়ে ভেঙে দেব কলতান
সবুজের সাতরঙে এঁকে দেব ভিখিরি আস্তিন
বাস্তিলের পাদদেশে রেখে দেব আমার পাদুকা
দেবতার ইন্দ্রপুরে কোনো এক দুপুরের রোদে
পোড়াব আমার প্রাণহীন প্রেমের অপাঠ্য গ্রন্থ।
২। দুঃখ এবং দার্শনিক
দার্শনিকদের মতো দুঃখগুলো আকাশে ওড়াই
ভাবনার রাজ্যে রাতভাঙা ভোরে করি কলতান
কবে এক কোকিলের কন্ঠ শুনে থেমেছিল পথ
সে পথ হারিয়ে গেছে জোয়ারের জুয়ার আসরে
লেনদেনে ক্লান্ত আমি বিয়োগের অংশ নিয়ে শান্ত
বিভ্রান্তির তাল পুকুরের কিসসা কথা গেছি ভুলে
যে প্রেমের অমর কবিতা নিয়ে একেছি হৃদয়
উদয়ের পথে মেলে নাই তার মোনালিসা মন
ক্ষণিকের ড্যাফোডিল ফোটে সকালের শুদ্ধ রোদে
বিকেলের বোধে সে ক্ষণ হারায় সন্ধ্যার পাড়ায়
পদ্মের অধরে ওড়া দখিনার দোয়াতের কালি
জ্বালাতে পারে না আর নিরাকার জীবনের গল্প
রাতভাঙা ভাবনার রাজ্যে তবলার তাল কেটে
এটেল মাটির গন্ধে গড়ি রোজ নিজের ভাস্কর্য।
৩। রুদ্ধপথ
হারিয়ে ফেলেছি অবরুদ্ধ দরোজা খোলার চাবি
বাহিরে দাড়িয়ে আছি এক কানামাছি বেলা হয়ে
উজ্জয়নি থেকে প্রিয়দর্শি ছোটে মগধের পথে
সিংহাসন কম্পমান আলোচিত মৃত্যুর উত্তাপে।
প্রিয়তমা পড়েনি প্রেমের প্রেমোময় ধারাপাত
দেখেনি সে বাঁশ বাগানের গলিতে উদিত চাঁদ
আহ্লাদের অক্টোপাশে নিবন্ধিত তার তপ্তহাত
বিনিদ্র রাতের ঘোরে সে এখন ওড়ায় উত্তাপ
নির্বিকার চোখের ভাষায় নেই তার অনুরাগ
নেই অভিমান অনুতাপ নেই নাচের নোলক
নোঙর হারানো নাবিকের মতো পথ হারা পথে
সমর্পিত প্রেমিকা আমার হারিয়েছে সোজা মন
অবরুদ্ধ দরোজা খোলার গচ্ছিত চাবির গোছা
হারালে হারিয়ে যাক খুজব না আর কোনদিন।