সোনারগাঁ প্রতিনিধি: বারবার মানববন্ধনে করেও শব্দ দূষণ ও বায়ূ দূষণের কোনো প্রতিকার পাচ্ছেনা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ৮ গ্রামের বাসিন্দারা। মঙ্গলবার(৩১ অক্টোবর) দুপুরে হাড়িয়া চক্রবর্তী পাড়া এলাকায় কারখানার প্রধান ফটকের সামনে ৩’শতাধিক নারী-পুরুষ “আমরা দূষণ মুক্ত পরিবেশ চাই, আমরা সুস্থ পরিবেশে বাচঁতে চাই” এমন প্লেকার্ড হাতে নিয়ে শব্দদূষণ ও বায়ু দূষণ থেকে রক্ষা পেতে আমান সিমেন্ট নামে একটি কারখানার বিরুদ্ধে আবারো মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। এতে মোগরাপাড়া-আনন্দবাজার সড়কে যান চলাচল দেড় ঘন্টা বন্ধ হয়ে যায়।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, কোম্পানীর শব্দ ও বায়ূ দুষণের হাত থেকে বাচঁতে এ নিয়ে কয়েকবার মানববন্ধন করেছি। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তর সহ সকল দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছিনা। বরং ওই কোম্পানী এখন তাদের শব্দ দূষণের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোম্পানীর শব্দদূষনের কারনে কারখানার আশপাশের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। অতিরিক্ত বায়ূ দূষণের কারনে শ্বাস নেওয়া যায়না। শব্দ দূষণের কারনে তাদের সন্তানরা পড়াশুনা করতে পারছেনা। এবিষয়ে কোম্পানীর কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। দূষণ থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান তাঁরা।
ওই এলাকার স্থানীয় এক নারী বলেন, আবাসিক এলাকায় ৪৫ থেকে ৫৫ ডেসিবল শব্দ থাকার কথা। কিন্তু আমরা মেশিনের মাধ্যমে মেপে দেখি এখানে ১৬০ ডেসিবল শব্দ রয়েছে, যা অতিমাত্রার শব্দ দুষণ। আমরা আমাদের পরিবার নিয়ে সুস্থভাবে বাচঁতে চাই। প্রশাসনের কাছে আবেদন আমাদের বাচাঁর জন্য পরিবেশ দেন।
৬ষ্ঠ শ্রেনিতে পড়–য়া বুশরা জাহান বলেন, আমি পড়তে পারিনা, মা ডাকলে শুনিওনা। পরিক্ষায় খারাপ ফলাফল করি।
একাদশ শ্রেনির আয়েশা সিদ্দিকা ইভা বলেন, আমরা পড়াশুনা করব কিভাবে ঘরের ভিতরে ভুকম্পন, ঘরের বাহিরে বায়ু ও শব্দ দুষণ অতিমাত্রায়। শব্দের কারণে এর মধ্যে কানের চিকিৎসক দেখিয়েছি। সুস্থ ভাবে বেচেঁ থাকাই আমাদের প্রত্যাশা।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) রেজওয়ান উল ইসলাম বলেন, বিষয়টির তদন্ত করার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিভাগীয় ও জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর এ বিষয়টির তদন্ত করেছে।
জানা যায়, ২০১৭ সালের মে মাসে বছরে ৩৫ লাখ টন উৎপাদনক্ষমতা নিয়ে আমান সিমেন্ট মিলস ইউনিট-২ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বৈদ্দ্যেরবাজার ইউনিয়নের হাড়িয়া চক্রবর্তী পাড়ায় গড়ে ওঠে। প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠার পর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা দূষণের কবলে পড়ে।